কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

গজারিয়ায় ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন হোসেন্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুল হক ও তাঁর লোকজন। এ সময় পুলিশ তাঁদের বাধা দিলে মনিরুল হক ও তাঁর লোকজনের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ আহত হয়েছেন কয়েকজন। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার হোসেন্দি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন সাদ্দাম হোসেন ও মো. শামীম। আহত অন্যদের নাম জানা যায়নি। অভিযুক্ত মনিরুল হক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আনারস প্রতীকের প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সমর্থক। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকে হোসেন্দি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছিল। ওই কেন্দ্রে মনিরুল হক ও তাঁর লোকজন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন। বেলা আড়াইটার দিকে মনিরুলের লোকজন নিয়ে ওই কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেন। তাঁরা আনারস প্রতীকে সিল মারেন। এতে প্রায় ঘণ্টাখানেক ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। আবারও কেন্দ্রটি দখলের চেষ্টা করেন তাঁরা। এ সময় ওই কেন্দ্রের দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বদিউজ্জামান এলে তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করেন মনিরুলের লোকজন। পুলিশের সঙ্গে মনিরুল ও তাঁর লোকজনের কয়েক দফা গোলাগুলি হয়। এতে পুলিশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেলা আড়াইটার দিকে কিছু লোক ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে আমরা সেগুলো উদ্ধার করেছি। এ ঘটনায় আধা ঘণ্টার মতো ভোট বন্ধ ছিল। পরে আবার ভোট গ্রহণ শুরু হয়।’ সংঘর্ষ ও গোলাগুলি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি কেন্দ্রের বাইরে হয়েছে। এ বিষয়ে আমার জানা নেই।’ এ বিষয়ে জানতে মনিরুল হক মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বলেন, কোনো হামলার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গজারিয়া থানার ওসি রাজীব খানসহ কয়েকজন পুলিশ কাপ-পিরিচের চেয়ারম্যান প্রার্থী মনসুর আহমদ খান জিন্নার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়েছেন। তাঁরা আমাদের সমর্থক ও লোকজনকে আনারস প্রতীকে ভোট দিতে দিচ্ছিলেন না। এতে ভোটাররা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। পুলিশ আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে। আমাদের লোকজন আহত হয়েছে।’

ভৈরবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে তিন বংশের সংঘর্ষে ৬০ জন আহত

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব নিয়ে একটি গ্রামের তিন বংশের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে ৬০ জন আহত হয়েছেন। আজ বুধ ও গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের আগানগর গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪০ জন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিরা দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন। কেউ কেউ বল্লমবিদ্ধ হয়েছেন। চিকিৎসা নিতে আসা ৪০ জনের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগানগর গ্রামে অবস্থিত জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজে কিছুদিন পর ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন হবে। ওই গ্রামের সরুল্লা বাড়ির লোকজনের সঙ্গে ব্যাপারী বাড়ি ও আফিল উদ্দিন বাড়ির লোকজনের পুরোনো বিরোধ আছে। সরুল্লা বাড়ির লোকজনের নেতৃত্ব দেন আগানগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন। ব্যাপারী বাড়ির নেতৃত্বে আছেন ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি আক্কাস আলী এবং আফিল উদ্দিন বাড়ির নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। স্থানীয় মানুষেরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় আনন্দবাজার এলাকায় উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। আগের দিনের ঘটনার সূত্র ধরে গ্রামটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। গ্রামের অন্যান্য বংশের লোকজন দুই পক্ষে ভাগ হয়ে যান। এমন অবস্থায় আজ সকাল ১০টার দিকে উভয় পক্ষ আবার সংঘর্ষে জড়ায়। আজ প্রথমে সরুল্লা বাড়ির লোকজন আফিল উদ্দিন ও ব্যাপারী বাড়ির লোকজনের বাড়িতে হামলা চালান। ছয় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পুলিশ বিকেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সরুল্লা বাড়ির নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দিনের ছেলে হিরা মিয়া বলেন, ‘প্রথম দিনের ঘটনা ঘটেছে প্রতিপক্ষদের অতিরিক্ত উসকানির কারণে। আজ সকালে আবার আমাদের পক্ষের লোকজনকে মারধর করেছে তারা। শেষে আমাদের লোকজনও প্রতিরোধে নামে।’

কথা–কাটাকাটির জেরে শিক্ষার্থীর মাথা ফাটালেন সবজি বিক্রেতা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ বুধবার বিষয়টি জানাজানি হয়। মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম আনাস হোসাইন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অভিযুক্ত ওই ব্যাক্তির নাম শামসুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় ভাসমান সবজি বিক্রেতা। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গতকাল ২ নম্বর গেট এলাকায় সাপ্তাহিক বাজারের দিন ছিল। ওই দিন এ এলাকায় তূলনামূলক বেশি ভিড় থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বিভিন্ন বাসা অথবা কটেজে থাকা শিক্ষার্থী এখান থেকে বাজার করেন। অনেক ভাসমান সবজি বিক্রেতা এই বাজারে আসেন। সেখানেই সবজির দাম জিজ্ঞেস করা নিয়ে তর্কের জেরে আনাসকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। জানতে চাইলে আনাস হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় তিনি সবজি কিনতে বাজারে যান। পরে তিনি ভাসমান ওই বিক্রেতাকে বিভিন্ন সবজি দাম জিজ্ঞেস করেন। ওই বিক্রেতা দাম না জানিয়েই ‘তুই’ সম্বোধন করে কথা বলেন। তিনি এর প্রতিবাদ জানান। তবে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই বিক্রেতাসহ আরও কয়েকজন তাঁকে মারধর করেন। পরে উপস্থিত অন্য শিক্ষার্থীরা তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই ছাত্রের মাথা ফেটে গিয়েছিল। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক অহিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা শোনার পরপরই তাঁরা ওই বাজারে গিয়েছিলেন। তবে সবজি বিক্রেতাকে পাননি। যেহেতু এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের এলাকা, তাই এ ব্যাপারে ওই ছাত্রকে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বিদেশ থেকে ঢাকা ফিরেই গ্রেপ্তার ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক

রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি হলেন বেইলি রোডে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক সোহেল সিরাজ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। বিমানবন্দরে নামার পরই অভিবাসন পুলিশ আটক করে সোহেল সিরাজকে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ–সিআইডির হাতে তুলে দেয়। বেইলি রোডে আগুন লাগার পর তিনি দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে ভয়াবহ ওই আগুনের ঘটনায় মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) নিজামউদ্দিন ফকির আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় করা মামলায় সোহেল সিরাজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বুধবার সকালে সিআইডি সোহেল সিরাজকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠায়। শুনানি শেষে আদালত তাঁর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের আটতলা ভবনে আগুন লাগে। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিল বিরিয়ানির দোকান কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁ। এ ছাড়া ভবনটির অন্যান্য তলায়ও ছিল অনেকগুলো খাবারের দোকান। সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়া আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন নারী এবং ৮ শিশু ছিল। তাঁরা সবাই খাবার খেতে ভবনটির বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি।

নাটোরে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনে চটের বস্তা গুঁজে ট্রেন চলাচল

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আজ বুধবার সকালে রেললাইনে জোড়া লাগানো অংশে চার ইঞ্চি ভেঙে যায়। আবদুলপুর-রাজশাহী রেললাইনে উপজেলার মাড়িয়া এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রেলওয়ের কর্মীরা সেখানে চটের বস্তা গুঁজে দিয়ে ট্রেন চলাচল অব্যাহত রাখেন। পরে দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত করা হয়। আড়ানি রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, লোকমানপুর রেলস্টেশন–সংলগ্ন মাড়িয়া এলাকায় রেললাইনের একটি জোড়া লাগানো অংশের প্রায় চার ইঞ্চি ভেঙে গিয়েছিল। আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঘটনাটি ঘটে। এ সময় পাবনা থেকে রাজশাহীগামী একটি কমিউটার ট্রেন আসছিল। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখার পর সংকেত দিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেন। তাঁরা আড়ানি ও লোকমানপুর স্টেশনে বিষয়টি জানান। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রেললাইনের ওই স্থানে চটের বস্তা গুঁজে দিয়ে ট্রেনগুলো ধীরগতিতে চালানো হয়। আড়ানী রেলস্টেশনের মাস্টার আলমগীর হোসেন জানান, রেললাইন ভাঙার কারণে আড়ানী স্টেশনে ঢাকাগামী সিল্কসিটি আন্তনগর ট্রেন কিছু সময় থেমে ছিল। পরে ভাঙা স্থানে বস্তা গুঁজে দিয়ে ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো হয়। রেলওয়ে পশ্চিামাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবদুল আওয়াল ভুঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, অনেক পুরনো হওয়ায় লাইনের কিছুটা ভেঙে গিয়ে থাকতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনের ওপর দিয়ে ধীরগতিতে ট্রেন পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বেলা দেড়টা নাগাদ ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।