কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

যত মানবিক করিডোর

সূত্র : কালবেলা, ০৪ মে ২০২৫

যত মানবিক করিডোর

মানবিক করিডোর নতুন কোনো ধারণা নয়। আধুনিক ইতিহাসে এর ভূরি ভূরি উদাহরণ রয়েছে। বিশ্ব শতাব্দী থেকে সংঘাতপূর্ণ বহু এলাকায় এমন নিরাপদ করিডোর প্রতিষ্ঠা করা হয়। নিচে কিছু মানবিক করিডোর নিয়ে আলোচনা করা হলো।

 

 

সারায়েভো

নিরাপত্তা পরিষদের নেওয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে বসনিয়ার সারায়েভোতে ১৯৯২-৯৫ সালে মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। চার বছর ধরে সার্বিয়ান সেনাবাহিনী সেখানে গণহত্যা চালিয়েছিল। বেসামরিক লোকজন সরিয়ে নিতে ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৩ সালে নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে সেব্রেনিৎসা ছিটমহলকে নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে ওই বছরেই আরেক প্রস্তাবের মাধ্যমে সারায়েভো, জেপা, গোরাজদে, তুজলা ও বিহাচকেও এর অন্তর্ভুক্ত করে মোট ছয়টি মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

 

গাজা

 
 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের সংঘাতের মধ্যে অনেক সময় বিভিন্ন অঞ্চলে মানবিক করিডোর করা হয়। তবে সেগুলো বেশিরভাগ সময়ই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছিল। ২০০৮ থেকে ৯ সালের মধ্যে গাজায় মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠা হলেও তা স্থায়ী হয়নি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর গাজায় যখন মানবিক করি করা হয়, তখনো এর একই পরিণতি হয়েছে।

 

 

 

ঘৌতা

২০১৮ সালে সিরিয়ার ঘৌতা থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে আনার জন্য মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ওই সময় সেখানে কল্পনাতীত বিমান হামলা চালাচ্ছিল দেশটির বিমানবাহিনী।

 

 

মারিউপোল

২০২২ সালের মার্চে ইউক্রেন ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা একটি মানবিক করিডোরের বিষয়ে সম্মত হয়েছিলেন—যার লক্ষ্য ছিল সংঘাতময় এলাকা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরে যেতে সহায়তা করা। ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিউপোলে রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলার মধ্যে আটকে পড়া ৪ লাখের বেশি বেসামরিক মানুষকে সরাতে ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে সেখানে মানবিক করিডোরের সংখ্যা কম থাকায় এটি টেকসই হয়নি।

 

 

টাইগ্রে

গৃহযুদ্ধের এ দুই বছরে ইথিওপিয়ার টাইগ্রে বাইরের বিশ্ব থেকে মোটামুটি বিচ্ছিন্ন ছিল। সেখানকার হাসপাতালগুলোতে ওষুধ শেষ হয়ে যাচ্ছিল। বিদ্যুৎ, ফোন ও ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবাও সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছিল। যুদ্ধ চলাকালে দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ করেছিল। সে সময় ওই অঞ্চলে বহু মানুষ মাসের পর মাস সরকারি অবরোধে আটকে পড়লে ২০২২ সালের নভেম্বরে মানবিক করিডোরগুলো চালুর মধ্য দিয়ে তাদের প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয়।

 

 

গ্রোজনি

১৯৯৯ সালে চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনি আক্রমণ করে শহরটি অবরোধ করে রাশিয়া। এতে নগর এলাকা প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর অবরুদ্ধ শহর থেকে বেসামরিকদের সরে যাওয়ার জন্য রুশ কমান্ডাররা একটি মানবিক করিডোর প্রস্তুত করেন।

 

 

লাচিন করিডোর

প্রথম আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধের (নাগোর্নো-কারাবাখ যুদ্ধ) সময় ১৯৮৯ সালে লাচিন করিডোর স্থাপিত হলেও সেটি দুই বছরের মধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছিল আজারবাইজান সরকার।

 

 

গোমা

আফ্রিকার কঙ্গোয় ২০০৮ সালে রাষ্ট্রীয় বাহিনী এবং জেনারেল লরেন্ট নকুন্ডার নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যে সশস্ত্র দাঙ্গা চরম আকার ধারণ করলে জাতিসংঘের প্রস্তাবে গোমা অঞ্চলে একটি মানবিক করিডোর খোলার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেটি শেষ পর্যন্ত সামরিক নানা বিষয়ে জড়িয়ে সংকটে পড়ে যায়।