কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

আব্রাহাম লিংকনের জন্মদিন আজ

সূত্র : কালের কণ্ঠ, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আব্রাহাম লিংকনের জন্মদিন আজ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকনের জন্মদিন আজ। তিনি ১৮০৯ খ্রিষ্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি (আজকের এই দিনে) কেনটাকির হডজেনভিলে কাছে একটি দরিদ্র্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। লিংকন একজন মার্কিন রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী ছিলেন। তিনি ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তাকে হত্যার আগপর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

 

 

নৈতিক, সাংস্কৃতিক, সাংবিধানিক এবং রাজনৈতিক সঙ্কটে তিনি আমেরিকাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ইউনিয়ন সংরক্ষণ, দাসত্ব বিলোপ, ফেডারেল সরকারকে মজবুত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে আধুনিকীকরণে সফল হন।

 

আব্রাহাম টমাস লিংকন এবং ন্যান্সি হ্যাঙ্কস লিংকনের দ্বিতীয় সন্তান। তিনি স্ব-শিক্ষিত ছিলেন যার পেছনে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন ওনার বাবা-মা। তিনি মূলত তার বাবার জন্যই পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন শত দারিদ্রতার মধ্যে। তিনি তার বন্ধুদের পুরাতন বই সংগ্রহ করে পড়তেন। এবং এভাবেই তিনি শিক্ষিত হয়েছেন। তিনি একজন আইনজীবী, ইলিনয় রাজ্যের বিধায়ক এবং ইলিনয় থেকে মার্কিন কংগ্রেস সদস্য হয়েছিলেন।

 

তিনি ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে নতুন রিপাবলিকান পার্টির নেতা হয়ে রাজনীতিতে নতুনভাবে প্রবেশ করেন এবং স্টিফেন ডগলাসের বিরুদ্ধে ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বিতর্কে তিনি জাতীয় দর্শকের কাছে পৌঁছেছিলেন। লিঙ্কন ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়েছিলেন এবং উত্তরের জয়ের পথ সুদুরপ্রসারিত করেছিলেন।

 

 

দক্ষিণে দাসত্বের পক্ষের উপাদানগুলো তার সাফল্যের সঙ্গে উত্তরের দাসত্ব অনুশীলনের অধিকার প্রত্যাখ্যান করে এবং দক্ষিণ রাজ্যগুলি ইউনিয়ন থেকে পৃথক হওয়া শুরু করে। এর স্বাধীনতা সুরক্ষার জন্য, নতুন কনফেডারেট স্টেটস দক্ষিণের মার্কিন কেল্লা ফোর্ট সামিটের উপর গুলি চালিয়েছিল এবং লিংকন এই বিদ্রোহ দমনে এবং ইউনিয়ন পুনরুদ্ধার করার জন্য বাহিনী গঠন করেছিলেন। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি তিনি আইনত দাসপ্রথা বিলুপ্ত করেন।

 

কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকানরা তা মেনে নিতে পারেনি। তারা বিভক্ত হয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করে আমেরিকাকে বিভক্ত করে। পরবর্তীতে এই অভ্যন্তরীণ বিরোধ গৃহযুদ্ধের সূচনা করে। 

 

১-৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পেনসেলভানিয়ার গেটিসবার্গে এই গৃহযুদ্ধে প্রায় আট হাজার মানুষ নিহত হয়। ১৯ নভেম্বর ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে এক স্মরণসভায় আব্রাহাম একটি সংক্ষিপ্ত ও দুনিয়া কাঁপানো ভাষণ দেন। 

 

 

মাত্র দুই মিনিটে ২৭২ শব্দের এই বিখ্যাত ভাষণটিই 'গেটিসবার্গ স্পিচ'। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ। এই ভাষণের সবচেয়ে লক্ষণীয় দিক হলো মাত্র একটি বাক্যে গণতন্ত্রের নিখুঁত সংজ্ঞা দিয়েছেন লিংকন। তার ভাষ্যমতে, ‘গণতন্ত্র হলো জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা সরকার, জনগণের জন্য সরকার।’

 

 

লিংকন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত জাতিকে পুনর্মিলনের মাধ্যমে সুস্থ করার চেষ্টা করেছিলেন। অ্যাপোমাটক্সে যুদ্ধ শেষ হওয়ার কয়েক দিন পর ১৮৬৫ সালের ১৪ এপ্রিল লিঙ্কন তাঁর স্ত্রী মেরির সঙ্গে ফোর্ডের থিয়েটারে একটি নাটক দেখতে যান। তখন চুক্তিবদ্ধ আততায়ী জন উইলকস বুথ তাকে হত্যা করে। লিংকনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শহীদ নায়ক হিসাবে স্মরণ করা হয় এবং তিনি আমেরিকার ইতিহাসের অন্যতম সেরা রাষ্ট্রপতি হিসাবে স্থান পান।